উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও কয়েকদিনের অতিবৃষ্টিতে সৃষ্টি হওয়া বন্যায় বগুড়ার সোনাতলায় ৩টি ইউনিয়নের ৯ হাজার পরিবারের ৩১ হাজার ৫৩২ জন মানুষ পানিবন্দি রয়েছে বলে জানান উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা। অনেকে ঘর বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছেন।
এছাড়াও উপজেলার বন্যা কবলিত এলাকায় ২০ হাজার গরু-ছাগল ও ৬৫ হাজার হাস-মুরগী পানিবন্দি রয়েছে বলে জানান উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নুসরাত জাহান লাকি।
রোববার (৭ জুলাই) বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, যমুনার পানি ৩ সেন্টিমিটার কমেছে। তবে বিপদসীমার ৫৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সোনাতলার বন্যা কবলিত চারটি ইউনিয়নের বালিয়া ডাঙা, চর খাবুলিয়া, খাটিয়ামাড়ি চর, চর সারুলিয়া, আউচেরপাড়া চর, মূষারপাড়া চর, জন্তিয়ের পাড়া, মহব্বতের পাড়া, ভেকিরতাইড়, ভিকুনের পাড়া, পুর্ব তেকানী, পুর্ব সুজাইতপুর, রাধাকান্তপুর, চালালকান্দিসহ প্রায় ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। সেখানে শুকনো খাবার ও গো খাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।
তেকানী চুকাইনগর ইউনিয়নের ভিকুনেরপাড়া গ্রামের মোজাম সরকার, সাকা সরকার, তোতা সরকারসহ অনেকে বলেন, এ এলাকায় এখনও কোনো ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছায় নি। আমাদের খাবার পানি ও গো খাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। ঘরের মধ্যে হাটু পানির মধ্যই অসহায়ভাবে আমাদের দিনকাল যাচ্ছে।
পানিবন্দী হওয়ায় ১৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি মাদ্রাসা ও একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ রয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, সোনাতলায় ৩৮৯৩ কৃষক পরিবার বন্যা আক্রান্ত। এছাড়াও ৬৫৫ হেক্টর ফসলি জমি পানিতে তলে গেছে। এরমধ্যে ৪৭০ হেক্টর পাট, ১৭৫ হেক্টর আউস ধান, ২ হেক্টর আমন বীজতলা ও শাকসবজি ৮ হেক্টর। বিশেষ করে পাট বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।
ইউএনও সাবরিনা শারমিন বলেন, বন্যা পরিস্থিত সার্বক্ষণিক জানার জন্য আমরা ৬ সদস্য মনিটরিং সেল গঠন করেছি। বন্যা দুর্গত এলাকায় কখন কি প্রয়োজন তা আমরা এ সেলের মাধ্যমে জানছি এবং প্রয়োজনী ব্যবস্থা নিচ্ছি। এছাড়াও তিনটি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা রয়েছে। ৮টি মেডিকেল টিম কাজ করছে বন্যা কবলিত এলাকায়। পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তাও আমরা মজুদ রেখেছি।
বগুড়া-১ আসনের এমপি সাহাদারা মান্নান বলেন, বন্যার্তদের জন্য আমরা পর্যাপ্ত ত্রাণের ববস্থা করেছি। ইতোমধ্যেই সোনাতলায় প্রায় ৪০০ পরিবারকে খাদ্য সহায়ত করা হয়েছে। আরও ৪০ টন জিআর চাল মজুদ রয়েছে যা পর্যায়ক্রমে বিতরণ করা হচ্ছে।
টিএইচ